জীব ও অশ্ম এই দুইটি শব্দের সন্ধি হল জীবাশ্ম ।
এই জীবাশ্ম শব্দের জীব= যার প্রাণ আছে। আর অশ্ম শব্দের অর্থ হলো পাথর।
জীবাশ্ম
জীব দেহ সমুদ্র গর্ভে স্তরে স্তরে সঞ্চিত হওয়া পাললিক শিলাস্তরের মধ্যে চাপা পড়ার পর কালক্রমে শিলাস্তরের চাপে ও অভ্যন্তরীণ তাপে জীব দেহ অবিকৃত অবস্থায় প্রস্তুরীভূত হয়, সেই সকল জীব দেহের ছাপ শিলাস্তরে থেকে যায়, একে জীবাশ্ম বলে।
বৈশিষ্ট্য
১) শুধুমাত্র পাললিক শিলাস্তরে জীবাশ্ম দেখা যায়।
২) জীবাশ্ম পর্যবেক্ষণ করে শিলার বয়স নির্ণয় করা যায়।
৩) জীবাশ্মের সাহায্যে অতীত পৃথিবীর জীবের উদ্ভব, প্রকৃতি এবং বিবর্তন সম্পর্কে তথ্য জানা যায়।
৪) জীবাশ্ম বিষয়ক অধ্যায়নকে জীবাশ্মবিদ্যা (Paleontology) বলা হয়।
৫) জীবাশ্ম দেখে হিমালয় পর্বতকে পাললিক শিলার পর্যায়ে ফেলানো যায়।
প্রাপ্তিস্থান
ভারতে হিমালয় পর্বতে বহু প্রাণী ও উদ্ভিদ জীবাশ্ম দেখা যায়।
জীবাশ্মের শ্রেণীবিভাগ
সাধারণত জীবাশ্মকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়-
1) প্রাণী জীবাশ্ম
যে জীবাশ্মে প্রাণীর দেহাবশেষ প্রস্তুরীভূত রয়েছে তাকে প্রাণী জীবাশ্ম বলে।
2) উদ্ভিদ জীবাশ্ম
যে জীবাশ্মে উদ্ভিদের দেহাবশেষ প্রস্তুরীভূত রয়েছে তাকে উদ্ভিদ জীবাশ্ম বলে।
জীবাশ্মের গুরুত্ব
বৈজ্ঞানিক গবেষকদের কাছে জীবাশ্ম বিদ্যা বা Paleontology অধ্যায়ন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এর গুরুত্ব গুলি হল-
১) জীবাশ্ম দেখে সমসাময়িক কাজের জীবদেহের গঠন ও আকৃতি সম্পর্কে জানা যায়।
২) জীবাশ্ম পর্যবেক্ষণ করে উদ্ভিদ ও প্রাণীর বিবর্তন সম্পর্কে তথ্য জানা যায়।
৩) শিলার বয়স সম্পর্কে ধারণা লাভ করা যায়।
৪) পৃথিবীতে কোন যুগে কোন প্রাণীর বা উদ্ভিদের অস্তিত্ব ছিল তা জীবাশ্মের মাধ্যমেই জানা সম্ভব।
৫) জীবাশ্ম দেখে সেই সময়ের জলবায়ু সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।
৬) জীবাশ্ম দেখে হিমালয় পর্বতকে পাললিক শিলার পর্যায়ে ফেলা যায়।