বিযুক্তি রেখা কাকে বলে ? গুটেনবার্গ বিযুক্তি । মোহ বিযুক্তি । কনরাড বিযুক্তি

বিভিন্ন উপাদানের তারতম্য অনুসারে ভূ অভ্যন্তরে যে স্তর ভাগ গঠিত হয়েছে সেই স্তর গুলি একে অপরের সঙ্গে এক সূক্ষ্ম সীমারেখায় মিলিত হয়েছে, যাতে দুটি স্তরের মধ্যে সহজে পার্থক্য করা যায়। 

অর্থাৎ যে সীমারেখা দ্বারা বিভিন্ন স্তর গুলিকে পৃথক করা হয় সেই সীমারেখাকে বিযুক্তি রেখা বলে। 

  • শ্রেণীবিভাগ: 

ভূ অভ্যন্তরে তিনটি বিযুক্তি রেখা লক্ষ্য করা যায়।

যথা-

১) কেন্দ্রমন্ডল ও গুরুমন্ডলের সংযোগস্থলে গুটেনবার্গ বিযুক্তি রেখা।

২) গুরুমন্ডল এবং অশ্বমণ্ডলের সংযোগস্থলে মোহরোভিসিক বা মোহবিযুক্তি রেখা।

৩) সিয়াল ও সিমা স্তরের সংযোগস্থলে কনরাড বিযুক্তি রেখা।

১) গুটেনবার্গ বিযুক্তি

ভূ অভ্যন্তরে 2900 কিমি গভীরতায় P তরঙ্গ এর গতিবেগ হ্রাস পায় এবং S তরঙ্গ অস্তিত্ব হারায়,

যা একটি পরিবর্তিত অবস্থার নির্দেশ দেয়। 

এই অংশে একটি বিভেদ তল বিদ্যমান যা উপরিভাগের গুরুমন্ডল’কে নিচের কেন্দ্রমন্ডল থেকে আলাদা করে। একে গুটেনবার্গ বিযুক্তি বলে।

নামকরণ 

1912 খ্রিস্টাব্দে ভূমিকম্পবিদ প্রফেসর বেনো গুটেনবার্গ (Beno Gutenberg, 1889- 1960) প্রথম এই বিভাজন সীমার কথা বৈজ্ঞানিক যুক্তিসহকারে তুলে ধরেন। তার নাম অনুসারে নাম হয় এই বিযুক্তি রেখার নাম দেওয়া হয় গুটেনবার্গ বিযুক্তি। 

২) মোহরোভিসিক বা মোহবিযুক্তি 

ভূত্বকের 65 কিলোমিটার গভীরতায় P তরঙ্গ ও S তরঙ্গ এর হঠাৎ গতিবিধি একটি পরিবর্তীয় অবস্থা নির্দেশ দেয়।

এই অংশে একটি বিভেদ তল বিদ্যমান যা উপরিভাগের ভূত্বক’কে নিম্নের গুরুমন্ডল থেকে আলাদা করেছে। 

নামকরণ

যুগোশ্লাভিয়ার সিসমোলজিস্ট আন্দ্রিজা মোহরোভিসিক 1909 খ্রিস্টাব্দে এই তথ্য সর্বপ্রথম আবিষ্কার করেন। তার নাম অনুসারে এই স্তরের নাম হয় মোহরোভিসিক বা মোহবিযুক্তি।

৩) কনরাড বিযুক্তি

ভূত্বকের লঘু গ্রানাইট জাতীয় শিলাস্তর সিয়াল (সিলিকা + অ্যালুমিনিয়াম) ও অপেক্ষাকৃত ভারি ব্যাসাল্ট জাতীয় শিলাস্তর সিমা (সিলিকা + ম্যাগনেসিয়াম) যে সীমারেখা বা বিযুক্তি রেখা দ্বারা বিভক্ত তাকে কনরাড বিযুক্তি বলে। 

নামকরণ 

বিজ্ঞানী ভিক্টর কনরাড এর নাম অনুসারে এই বিযুক্তি রেখার নামকরণ করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *