পুঞ্জিত ক্ষয়
ভূপৃষ্ঠের অংশবিশেষ বা আবহবিকারপ্রাপ্ত শিলাখণ্ড, মৃত্তিকা প্রধানত অভিকর্ষের টানে ভূমির ঢাল বরাবর নেমে আসে বা মূল স্থান থেকে অন্য স্থানে স্থানান্তরিত হয় তাকে পুঞ্জিত ক্ষয় বা পুঞ্জিত স্থানান্তর বলা হয়।
বৈশিষ্ট্য:
১) অভিকর্ষজ বলের প্রভাবে পুঞ্জিত ক্ষয় হয়ে থাকে।
২) এক্ষেত্রে জলের উপস্থিতি পুঞ্জিত ক্ষয়কে ত্বরান্বিত করলেও জল পরিবহনের মাধ্যম নয়।
৩) পুঞ্জিত ক্ষয়ে পদার্থ ধীরে বা দ্রুত উভয়ভাবেই স্থান চ্যুত হতে পারে।
৪) পুঞ্জিত ক্ষয় ক্ষয়ীভবন -এর অংশ নয়।
পুঞ্জিত ক্ষয়ের কারণ
পুঞ্জিত ক্ষয়ের কারণ গুলি হল-
- আবহবিকারগ্রস্ত শিলারাশি বা অন্যান্য পদার্থ সমূহ উচ্চ আপেক্ষিক উচ্চতায় বা খাড়া ভূমিঢালের উপরে অবস্থান করলে, কোন কারণে ওই সকল বস্তুর ভারসাম্য বিঘ্নিত হলে পদার্থসমূহ ভূমির ঢাল বরাবর অভিকর্ষজ টানের প্রভাবে নিচের দিকে নেমে আসে।
- ভূমিকম্প বা ভূমিধস প্রবণ এলাকায় পুঞ্জিত ক্ষয় বিশেষ কার্যকারী।
- মৃত্তিকায় জলকণা অনুপ্রবেশের ফলে মৃত্তিকার ভারসাম্য বিঘ্নিত হলে পুঞ্জিত ক্ষয় ঘটে থাকে।
- খুব বেশি বৃক্ষছেদন, ধাপ চাষ প্রভৃতি পুঞ্জিত ক্ষয় ঘটাতে সাহায্য করে।
প্রকারভেদ:
পুঞ্জিত ক্ষয় মূলত তিন প্রকার-
১) প্রপাত:
কিছু খাড়া ঢাল থেকে শিলাখন্ড বা মৃত্তিকাস্তূপ অভিকর্ষজ বলের টানে হঠাৎ নেমে এলে তাকে প্রপাত বলে।
২) ধস:
কোন মসৃণ তল বরাবর অভিকর্ষজ বলের টানে ভূপৃষ্ঠে বিশেষ অংশ বা পদার্থ সমূহ নেমে এলে তাকে ধস বলে।
- ভূমিধস বা ল্যান্ডস্লাইট এরই অন্তর্গত।
৩) প্রবাহ:
অভিকর্ষজ বলের টানে ভূমির ঢাল বরাবর আবহবিকারগ্রস্ত পদার্থের নেমে এলে তাকে প্রবাহ বলে।
- প্রবাহ ধীর বা দ্রুত উভয়ভাবেই ঘটতে পারে।