তড়িৎ বিশ্লেষ্য পদার্থ ও তড়িৎ বিশ্লেষণ কাকে বলে?
তড়িৎ বিশ্লেষ্য পদার্থ
যেসব পদার্থ জলে দ্রবীভূত বা গলিত অবস্থায় আয়নে বিশ্লিষ্ট হয়ে তড়িৎ পরিবহন করে এবং তড়িৎ পরিবহনের ফলে তড়িৎদ্বারে নিজেরা রাসায়নিকভাবে বিশ্লিষ্ট হয়ে নতুন ধর্মবিশিষ্ট নতুন পদার্থ উৎপন্ন হয়, সেইসব পদার্থকে তড়িৎ বিশ্লেষ্য পদার্থ বলে।
তড়িৎ বিশ্লেষণ
যে পদ্ধতিতে উপযুক্ত দ্রাবকে দ্রবীভূত অবস্থায় বা বিগলিত অবস্থায় তড়িৎবিশ্লেষ্য পদার্থের মধ্যে দিয়ে তড়িৎপ্রবাহ চালনা করলে নতুন ধর্ম বিশিষ্ট পদার্থ উৎপন্ন হয়, সেই পদ্ধতিকে তড়িৎবিশ্লেষণ বলে।
- তড়িৎ বিশ্লেষণে তড়িৎ শক্তি রাসায়নিক শক্তিতে রূপান্তরিত হয়।
যে সকল পদার্থের তড়িৎ বিশ্লেষণ ঘটে তাদের তিন ভাগে ভাগ করা যায়, যেমন –
- অ্যাসিড: H2SO4, HCl
- ক্ষার: NaOH, KOH
- লবণ: NaCl, MgCl2
যে পাত্রের মধ্যে তড়িৎ বিশ্লেষণ করা হয় সেই পাত্রকে ভোল্টমিটার বলে। ভোল্টমিটারে রাখা গলিত বা জলে দ্রবীভূত তড়িৎ বিশ্লেষের মধ্যে দুটি সুপরিবাহী ধাতব পাত আংশিক ডুবিয়ে রাখা হয় ও এদের সাহায্যে তড়িৎ প্রবাহ চালনা করা হয়, এই পাত দুটিকে তড়িৎদ্বার বলে।
ব্যাটারির ঋণাত্মক মেরুর সাথে যুক্ত তড়িৎদ্বারকে অ্যানোড এবং ধনাত্মক মেরুর সাথে যুক্ত তড়িৎ দারকে ক্যাথোড বলে। জল দ্রবীভূত/ গলিত অবস্থায় তড়িৎ বিশ্লেষ্য পদার্থের অনুগুলি বিয়োজিত হয়ে ঋণাত্মক ও ধনাত্মক কনায় পরিণত হলে উহারা আয়ন নামে পরিচিত হয়। তারা যথাক্রমে ধনাত্মক ও ঋণাত্মক আয়ন নামে পরিচিত।
ক্যাটায়ন: H+, Ca2+, Al3+, NH4+ ইত্যাদি
অ্যানায়ন: cl– , NO3–, SO42-, PO43- ইত্যাদি
তড়িৎ বিশ্লেষণের কয়েকটি উদাহরণ
1) সোডিয়াম ক্লোরাইড (NaCl) এর তড়িৎবিশ্লেষণ
NaCl = Na+ + Cl–
ক্যাথোডে: Na+ + e– = Na
অ্যানোডে: 2Cl– – Cl2 + 2e–
2) জলের তড়িৎবিশ্লেষণ
H2O = H+ + O–
ক্যাথোডে: 2H2O + 2e– – H2 + 2OH–
অ্যানোডে: 2H2O – O2 + 4H+ + 2e–
3) কপার সালফেটের তড়িৎবিশ্লেষণ
CuSO4 = Cu2+ + SO42-
ক্যাথোডে: Cu2+ + 2e– = Cu
অ্যানোডে: Cu + SO42- = (Cu2+ + SO42-) + 2e–