অনেক সময় অগ্নুৎপাতের সময় ভূগর্ভস্থ ম্যাগমা ভূপৃষ্ঠে পৌঁছুতে না পেরে ভূ-অভ্যন্তরে সঞ্চিত ও শীতল হয়ে জমে যায়। এরূপ অগ্নুৎপাত’কে উদবেধী বা অন্তঃস্থ অগ্নুৎপাত বলা হয়।
উদবেধী অগ্নুৎপাত বা উদবেধী আগ্নেয়চ্ছ্বাসের ফলে ভূপৃষ্ঠে বিভিন্ন প্রকার ভূমিরূপে সৃষ্টি হয়। যেমন –
1) ব্যাথোলিথ (Batholith)
ভূ-অভ্যন্তরের ম্যাগমা জমাট বেঁধে বৃহদাকার স্তুপের সৃষ্টি করলে তাকে ব্যাথোলিথ বলে।
- ব্যাথোলিথ সাধারণত পাশাপাশি অবস্থিত দুটি পাতের মুখোমুখি সংঘর্ষের ফলে সৃষ্টি হয়।
উদাহরণ
উত্তর আমেরিকার হেনরি পর্বত ও আয়ারল্যান্ডের উই্কলো পর্বত।

2) ল্যাকোলিথ (Laccolith)
ভূপৃষ্ঠের নিচে ম্যাগমা জমে গিয়ে লেন্স বা মাশরুম এর আকৃতির ভূমিরূপ সৃষ্টি করলে তাকে ল্যাকোলিথ বলে।
- ভূপৃষ্ঠের উপরিভাগ ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে গেলে ল্যাকোলিথ উন্মুক্ত হয়ে পড়ে।
উদাহরণ
উত্তর আমেরিকার রকি পর্বতে পূর্ব দিকে এবং ছোটনাগপুর মালভূমিতে এই ধরনের ভূমিরূপ লক্ষ্য করা যায়।

3) ল্যাপোলিথ (Lapolith)
শিলাস্তরের মাঝে ম্যাগমা জমাট বেঁধে সরার আকৃতির ভূমিরূপ সৃষ্টি করলে তাকে ল্যাপোলিথ বলে।
- গ্রিক শব্দ Lopos থেকে ল্যাপোলিথ কথাটি উৎপত্তি। যার অর্থ Basin।
- ল্যাপোলিথের আকৃতি অবতল আকৃতি হয়ে থাকে, অনেকটা চায়ের চামচের মতো।
উদাহরণ
হিমালয়, আপ্লস, আটলাস ইত্যাদি পর্বতের নিম্ন অংশে অনেক ল্যাপোলিথ পরিলক্ষিত হয়।

4) সীল (Sill)
ভূত্বকের মধ্যে অনুভূমিকভাবে ম্যাগমা জমে গিয়ে যে ভূমিরূপ গঠন করে তাকে সীল বলে।
- ইহা সবসময় অনুভূমিকভাবে অবস্থান করে বলে এদের সবসময় ভূপৃষ্ঠের সঙ্গে সমান্তরালে অবস্থান করতে দেখা যায়।
- ভূপৃষ্ঠের উপরিভাগ ক্ষয়প্রাপ্ত হলে সীল উন্মুক্ত হয়ে পড়ে।
- ম্যাগমা পুরু স্তরে জমা হলে জমা হলে তাকে সীল এবং যদি পাতলা স্তরে জমা হয় তাকে বলে শীট।
উদাহরণ
USA আইডাহো মালভূমিতে এই ভূমিরূপ দেখা যায়।

5) ডাইক (Dyke)
ভূ অভ্যন্তরের ম্যাগমা উপরে উঠতে না পেরে পাললিক শিলা স্তরে উলম্বভাবে জমাট বেঁধে যে ভূমিরূপ সৃষ্টি করে তাকে ডাইক বলে।
- ভূপৃষ্ঠের উপরিভাগ ক্ষয়প্রাপ্ত হলে ডাইকগুলি খাড়া দেওয়ালের মতো দাঁড়িয়ে থাকে।
- ডাইক কয়েক সেন্টিমিটার থেকে কয়েকশো মিটার পুরো হতে পারে কিন্তু দৈর্ঘ্যে কয়েক মিটার থেকে কয়েক কিলোমিটার পর্যন্ত হয়।
উদাহরণ
ভারতের দাক্ষিণাত্যের মালভূমিতে এ ধরনের ডাইক ভূমিরূপ লক্ষ্য করা যায়।
