মুখ্য জোয়ার ও গৌণ জোয়ার কাকে বলে ও বৈশিষ্ট্য

পৃথিবীর উপর চাঁদ-সূর্য ও পৃথিবীর কেন্দ্রাতিক বলের প্রভাব প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময় অন্তর সমুদ্রের জলরাশি পর্যায়ক্রমে কোনো স্থানে ফুলে ওঠাকে জোয়ার বলে।

মুখ্য জোয়ার

আবর্তনের সময় পৃথিবীর যে অংশে চাঁদের আকর্ষণে যে জোয়ার হয় তাকে মুখ্য জোয়ার বলে।

উৎপত্তি

সূর্যের তুলনায় চাঁদ পৃথিবীর অধিক কাছে থাকায় পৃথিবীর উপর চাঁদের মহাকর্ষ বল অধিক কার্যকরী। পৃথিবী তার নিজের অক্ষের চারিদিকে অনবরত আবর্তন করে চলেছে। আবর্তন করতে করতে পৃথিবীর যে অংশ চাঁদের সামনে আসে সেখানে পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তির চেয়ে চাঁদের আকর্ষণ বেশি হওয়ায় সমুদ্র, নদীর জল ফুলে ওঠে মুখ্য জোয়ারের সৃষ্টি করে।

বৈশিষ্ট্য

1) পৃথিবীর আবর্তনের ফলে যে অংশ চাঁদের সামনে আসে সেখানে মুখ্য জোয়ার ঘটে।

2) মূলত চাঁদের আকর্ষণে এই জোয়ার ঘটে বলে একে চান্দ্র জোয়ারও বলা হয়।

3) একটি নির্দিষ্ট স্থানে একবার মুখ্য জোয়ার থেকে পরের মুখ্য জোয়ারের সময়ের ব্যবধান 24 ঘন্টা 52 মিনিট।

4) জলস্ফীতি বেশি হয়।

গৌণ জোয়ার

পৃথিবীর যে অংশে মুখ্য জোয়ারের সৃষ্টি হয়, তার বিপরীত দিকে তথা প্রতিপাদ স্থানে যে জোয়ারে সৃষ্টি হয় তাকে গৌণ জোয়ার বলে।

উৎপত্তি

পৃথিবীর আবর্তন গতির ফলে সৃষ্ট কেন্দ্রাতিক বল মাধ্যাকর্ষণ শক্তির বিপরীতে কাজ করে। এর প্রভাবে পৃথিবীর যে দিকে চাঁদ অবস্থান করে সেই অংশে চাঁদের মহাকর্ষ বল অধিক ক্রিয়া করে বলে সেই সে অংশে মুখ্য জোয়ার ঘটে থাকে। কিন্তু তার বিপরীত অংশ তথা প্রতিপাদ স্থান চাঁদ অপেক্ষা অনেক দূরে অবস্থান করায় এখানে চাঁদের মহাকর্ষ বল অপেক্ষা পৃথিবীর কেন্দ্রাতিক বল বেশি কার্যকরী হয়। ফলে ওই অংশে কেন্দ্রাতিক বলের প্রভাবে গৌণ জোয়ারের সৃষ্টি হয়।

বৈশিষ্ট্য

1) মুখ্য জোয়ারের বিপরীত অংশে প্রতিপাদ স্থানে গৌণ জোয়ার হয়।

2) পৃথিবীর কেন্দ্রাতিক বলের প্রভাবে এই জোয়ার ঘটে থাকে।

3) মুখ্য জোয়ারের 12 ঘন্টা 26 মিনিট পর গৌণ জোয়ার ঘটে থাকে।

4) মুখ্য জোয়ারের অপেক্ষা কম সক্রিয় এবং জলস্ফীতি কম হয়।

মুখ্য জোয়ার ও গৌণ জোয়ার কাকে বলে - চিত্র
মুখ্য জোয়ার ও গৌণ জোয়ার

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *