মরু বা মরুপ্রায় অঞ্চলে বায়ু সঞ্চয় কার্যের ফলে সৃষ্ট ভূমিরূপ হল বালিয়াড়ি।
বালিয়াড়ি
বায়ু প্রবাহের সঙ্গে বাহিত বালুরাশি বায়ুর গতিপথে বাধাপ্রাপ্ত হয়ে বিস্তীর্ণ স্থান জুড়ে ধীরে ধীরে স্তূপাকারে সঞ্চিত হয়। এইভাবে নিজে থেকে স্তূপীকৃত বালিরাশিকে বালিয়াড়ি বলে।
ভূবিজ্ঞানী ব্যাগনল্ড 1941 খ্রিস্টাব্দে “The Physics of Blown Sand and Desert Dunes” গ্রন্থে বলেছেন- প্রকৃত বালিয়াড়ি হলো এমন এক সচল বা গতিময় বালির স্তূপ যার গড়ে ওঠা পেছনে ভূমির আকৃতি বা কোনরকম নির্দিষ্ট প্রতিবন্ধকতার হাত নেই।
বৈশিষ্ট্য:
বালিয়াড়ির বৈশিষ্ট্য গুলি হল-
1) মরু ও মরুপ্রায় অঞ্চলে বায়ুর সঞ্চয় কার্যের ফলে এই ভূমিরূপ সৃষ্টি হয়।
2) বালিয়াড়ি চলমান প্রকৃতির হয়ে থাকে। বালুরাশিকণা বায়ুপ্রবাহের সাহায্যে বালিয়াড়ি সৃষ্টি করে বলে, বালিয়াড়ি সামনের দিকে ক্রমশ অগ্রসর হতে থাকে। এই অগ্রাসরের পরিমাণ বছরে প্রায় 3 থেকে 5 মিটার।
3) অবস্থান ভিত্তিতে বালিয়াড়ির উচ্চতা 3-20 মিটার আবার কখনো কখনো কয়েকশো মিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে।
4) বালিয়াড়ির দৈর্ঘ্য অবস্থান ও প্রকৃতি অনুযায়ী 1-6 কিমি হতে পারে।
5) বালিয়াড়ি প্রতিবাত ঢাল মৃদু 5° থেকে 15° ও অনুবাত ঢাল খাড়া প্রকৃতির প্রায় 20° থেকে 30° পর্যন্ত হয়ে থাকে।
শ্রেণীবিভাগ
অবস্থান অনুসারে বালিয়াড়িকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন-
- i) অগ্রবর্তী বালিয়াড়ি
- ii) মস্তক বালিয়াড়ি
- iii) পুচ্ছ বালিয়াড়ি
- iv) পার্শ্ব বালিয়াড়ি
- v) পরবর্তী বালিয়াড়ি
আকৃতি অনুসারে বালিয়াড়িকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন-
- i) অনুদৈর্ঘ্য বা সিফ বালিয়াড়ি
- ii) বার্খান বালিয়াড়ি
- iii) নক্ষত্র বালিয়াড়ি
- iv) অধিবৃত্তীয় বালিয়াড়ি
- v) তির্যক বালিয়াড়ি
- vi) দ্রাস বালিয়াড়ি
উদাহরণ
সাহারা মরুভূমি, ভারতের থর মরুভূমিতে বহু বালিয়াড়ি দেখা যায়।