কোষ
জীবদেহের গঠনগত ও কার্যগত একককে কোষ বলে।
কোষ জীবদেহের ক্ষুদ্রতম জীবিত একক। প্রতিটি জীবদেহ এক বা একাধিক কোষ নিয়ে গঠিত। কোষ জীবদের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য এককোষ থেকে আরেক কোষে পরিবহন করে। এছাড়াও কোষের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।
1665 খ্রিস্টাব্দে ইংরেজ বিজ্ঞানী রবার্ট হুক (Robert Hooke) তার তৈরি অণুবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যে কর্কের মৃত কোষ দেখতে পান। তিনি দেখেন মৌমাছির চাকের মতন কিছু ক্ষুদ্র কক্ষ এবং সেগুলিকে নাম দেন সেল বা প্রকোষ্ঠ। এভাবেই তিনি প্রথম কোষ আবিষ্কার করেন।
এরপর 1674 খ্রিস্টাব্দের বিজ্ঞানী ভ্যান লিউয়েনহুক (Antony Van Leeuwenhoek) প্রথম জীবিত কোষ আবিষ্কার করেন।
1932 সালে জার্মান বিজ্ঞানী রুসকা (Ernst Ruska) ইলেকট্রন অণুবীক্ষণ যন্ত্র আবিষ্কার করেন যার সাহায্যে কোষের ভিতরে উপস্থিত কোষীয় অঙ্গানুর ব্যাপারে জানতে পারা যায়।
কোষের প্রকারভেদ
অবস্থান ও কাজের উপর নির্ভর করে কোষকে প্রধানত দুই ভাগে ভাগ করা যায়। যথা-
1) দেহ কোষ
যে সমস্ত কোষ জীব দেহের বিভিন্ন অঙ্গ ও অঙ্গ তন্ত্র গঠনে সহায়তা করে তাদের দেহ কোষ বলে।
যেমন- পেশি কোষ, স্নায়ু কোষ।
2) জনন কোষ
যে সমস্ত কোষ জীবদেহের জনন কাজে অংশ নেয় তাদেরকে জনন কোষ বলে।
যেমন- শুক্রাণু ও ডিম্বাণু
- নিউক্লিয়াসের গঠনের উপর নির্ভর করে কোষকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়।
1) আদি কোষ বা প্রোক্যারিওটিক কোষ
যে সমস্ত কোষে সুগঠিত নিউক্লিয়াস থাকে না তাদেরকে আদি কোষ বা প্রোক্যারিওটিক কোষ বলে।
প্রধানত ব্যাকটেরিয়ার দেহে এই ধরনের কোষ দেখা যায়। Pro অর্থাৎ আদি এবং Karyon অর্থাৎ নিউক্লিয়াস। এই ধরনের কোষে উপস্থিত নিউক্লিয়াস অনুন্নত, এজন্যই এদের আদি কোষ বা প্রোক্যারিওটিক কোষ (Prokaryotic) বলে।
2) প্রকৃত কোষ বা ইউক্যারিওটিক কোষ
যে সমস্ত কোষে সুগঠিত, আবরিত নিউক্লিয়াস থাকে তাদের প্রকৃত কোষ বা ইউক্যারিওটিক কোষ (Eukaryotic) বলে।
ইউ কথাটির অর্থ সম্পূর্ণ বা আদর্শ।
বিভিন্ন উন্নত জীবদেহ ছাড়াও শৈবাল ও ছত্রাকের দেহে এই ধরনের কোষ লক্ষ্য করা যায়।