পাগলপন্থী কারা এবং পাগলপন্থী বিদ্রোহ বা আন্দোলন কাকে বলে আসুন জেনে নেই-
পাগলপন্থী কাদের বলা হত
ঔপনিবেশিক শাসনকালে অবিভক্ত বাংলায় ময়মনসিংহ জেলার সুসঙ্গ- শেরপুর অঞ্চলে পাহাড়ের পাদদেশ গারো উপজাতির বসবাস ছিল। করিম শাহ নামে জৈনিক ফকির ঐ উপজাতিদের মধ্যে নতুন এক ধর্মমত প্রচার করা শুরু করেন। এই ধর্মের অনুরাগীদের পাগলপন্থী বা বাউল বলা হতো।
সময় কাল | ১৮২৫ থেকে ১৮২৭ খ্রিস্টাব্দ |
বিদ্রোহের এলাকা | ময়মনসিংহ |
নেতৃত্ব বৃন্দ | করিম শাহ ও তার পুত্র টিপু শাহ |
ফলাফল | ব্যর্থতা |
পাগল পন্থী বিদ্রোহ কি
১৮১৩ খ্রিস্টাব্দে করিম শাহের মৃত্যুর পর তার পুত্র টিপু শাহ বা টিপু পাগল পাগলপন্থী গারো জনগণদের সাথে নিয়ে ১৮২৫ খ্রিস্টাব্দে জমিদার, মহাজন ও ইংরেজদের শোষণ, অত্যাচার, নিপীড়নের বিরুদ্ধে একটি সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরু করেন। এই বিদ্রোহ পাগল পন্থী বিদ্রোহ নামে পরিচিত।
বিদ্রোহের কারণ:
এই বিদ্রোহের কারণ গুলি হল-
রাজস্ব বৃদ্ধি
১৮২৪-২৬ খ্রিস্টাব্দে ইঙ্গ-বর্মা যুদ্ধ ইংরেজদের যে বিপুল পরিমাণে আর্থিক ক্ষতি হয় তা পূরণ করার লক্ষ্যে ময়মনসিংহ অঞ্চলে প্রচুর পরিমাণে রাজস্ব কর বৃদ্ধি করা হয়। এর ফলস্বরূপ কৃষকদের আর্থিক দুরবস্থা চরমে পৌঁছায়।
শোষণ- অত্যাচার
ইংরেজদের সহযোগী জমিদার, মহাজন গারো উপজাতি কৃষকদের উপর তীব্র শোষণ ও অত্যাচার শুরু করে।
- টিপু শাহ গারোদের রাজা হিসাবে নিজেকে ঘোষণা করে ইংরেজদের রাজস্ব বৃদ্ধির প্রতিবাদে খাজনা বন্ধের আন্দোলন শুরু করে। তিনি মানুষের সমান অধিকারের কথা ঘোষণা করেন এবং জমিদারদের বিরুদ্ধে গণ আন্দোলন শুরু করেন।
- ১৮২৫ খ্রিস্টাব্দে ১৯ সে জানুয়ারি টিপু শাহ’র নেতৃত্বে বিদ্রোহীরা শেরপুর শহর দখল করে। শেরপুরের জমিদার পালিয়ে বাঁচেন। বিদ্রোহীরা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে দাবি করেন যে জমিদারের শোষণ অত্যাচার নিপীড়ন তারা কোনভাবেই মানতে রাজি নয়।
উপসংহার
ইংরেজ এবং জমিদারদের বিরুদ্ধে টিপু শহর এই আন্দোলন প্রায় দুই বছর ধরে চলে।
১৮২৭ খ্রিস্টাব্দে টিপু শাহকে বন্দী করা হয় এবং যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দন্তিত করা হলে এই বিদ্রোহের প্রথম পর্বের পরিসমাপ্তি ঘটে।