আবহবিকার কাকে বলে ? বৈশিষ্ট্য ও প্রকারভেদ

আবহবিকার (Weathering) শব্দটি আবহাওয়া (Weather) শব্দ থেকে এসেছে।

আবহবিকার (Weathering):

আবহাওয়া ও বায়ুমণ্ডলের বিভিন্ন উপাদান যেমন উষ্ণতা, বৃষ্টিপাত, আর্দ্রতা, বায়ু প্রবাহ ইত্যাদি এবং সূর্যালোক, নদী, জলরাশি, তুষারপাত, হিমবাহ প্রভৃতি দ্বারা ভূপৃষ্ঠের শিলাস্তর যান্ত্রিক পদ্ধতিতে চূর্ণ-বিচূর্ণ ও রাসায়নিকভাবে বিয়োজিত হয়ে মূল শিলাস্তরের ওপর পরিবর্তিত শিলা স্তর তৈরি করলে তাকে আবহবিকার বা বিচূর্ণীভবন বা শিলাবিকার বলে।

বৈশিষ্ট্য:

আবহবিকারের বৈশিষ্ট্য গুলি হল-

১) আবহবিকারের সাথে আবহাওয়া ও জলবায়ুর নিবিড় সম্পর্ক থাকে।

২) এই পদ্ধতিতে পদার্থের স্থান পরিবর্তন ঘটে না।

৩) আবহবিকারের প্রক্রিয়া খুব ধীরগতিতে সংঘটিত হয়।

৪) আবহবিকার ক্ষয়ীভবনকে ত্বরান্বিত করে।

৫) আবহবিকার অপসারণযুক্ত নয়।

প্রকারভেদ:

আবহবিকার মূলত তিন প্রকার, যথা-

১) যান্ত্রিক আবহবিকার

২) রাসায়নিক আবহবিকার

৩) জৈব আবহবিকার

১) যান্ত্রিক আবহবিকার (Physical Weathering):

আবহাওয়া বিভিন্ন উপাদান যেমন বৃষ্টিপাত, উষ্ণতা, আর্দ্রতা, বায়ু প্রবাহ ইত্যাদি এবং সূর্যালোক, নদী, জলরাশি, তুষারপাত, হিমবাহ প্রভৃতি দ্বারা শিলা উপরিস্তর বা অভ্যন্তরে ক্রিয়ার ফলে শিলা যান্ত্রিকভাবে চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে স্বস্থানে অবস্থান করলে তাকে যান্ত্রিক আবহবিকার বলে।

যান্ত্রিক আবহবিকারে শিলা রাসায়নিক ধর্মের পরিবর্তন হয় না বলে শিলা খনিজের কোন মৌলের পরিবর্তন ঘটে না।

  • শুষ্ক মরু অঞ্চল ও শীতল জলবায়ু যুক্ত অঞ্চল এবং পার্বত্য অঞ্চলে যান্ত্রিক আবহবিকারের আধিক্য দেখা যায়।

২) রাসায়নিক আবহবিকার (Chemical Weathering):

বায়ুমন্ডলে বিভিন্ন গ্যাস, জল ও অম্লের প্রভাবে শিলা রাসায়নিকভাবে বিয়োজিত হয় এবং শিলা মধ্যস্থ মূল খনিজগুলি নতুন গৌণ খনিজে পরিবর্তিত হয়, একে রাসায়নিক আবহবিকার বলে।

  • আর্দ্র নাতিশীতোষ্ণ, বৃষ্টিবহুল, উষ্ণ আর্দ্র জলবায়ুতে রাসায়নিক আবহবিকারের আধিক্য দেখা যায়।

৩) জৈব আবহবিকার (Biological Weathering):

আবহাওয়ার বিভিন্ন উপাদানগুলি ছাড়াও অনেক সময় উদ্ভিদ ও প্রাণী বিভিন্নভাবে শিলার ভৌত ও রাসায়নিক পরিবর্তন ঘটিয়ে থাকে, একে জৈব আবহবিকার বলে।

  • নাতিশীতোষ্ণ তৃণভূমি, সরলবর্গীয় অরণ্য প্রভৃতি এলাকায় জৈব আবহবিকারের আধিক্য দেখা যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *